Wednesday, June 23, 2010

World Cup Summary 1930 to 2006

Fifa World Cup Short History:

বিশ্বকাপ নিয়ে মানুষের পাগলামির শেষ নেই। বাড়ি, গাড়ি থেকে শুরু করে মানুষ তার শরীর পর্যন্ত ঢেকে ফেলছে প্রিয় দলের পতাকায়। নিশ্চই তুমিও ঠিক করে ফেলেছো যে প্রিয় দলটির একটা পতাকা না কিনলেই নয়!

সারা বিশ্বই এখন উত্তেজনা আর অপেক্ষার আগ্রহে কাঁপছে। সেই ১৯৩০ সাল থেকে শুরু করে ২০০৬ পর্যন্ত ১৮ টি বিশ্বকাপের প্রতিটিই পৃথিবীর মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করেছে উন্মাদনা। কাজেই ২০১০ সালেও ১৯তম বিশ্বকাপে যে মাতামাতি হবে, আর এমন কি? মানুষের মাতামাতির কি শেষ আছে? যেমন দল নিয়ে, তেমনি প্রিয় খেলোয়াড়কে নিয়েও চলছে এই উন্মাদনা।
MulRochona2705_logo.gif
সেই ১৯০৪ সালের কথা, ফিফার (FIFA- Fédération Internationale de Football Association) জন্ম হয়েছে কেবল, তখনও কিন্তু বিশ্বকাপ শুরু হয়নি। তবে ফিফার চিন্তা ছিলো, একদিন বিশ্বকাপের আয়োজন করবে। অনেকদিন পর, ১৯৩০ সালে প্রেসিডেন্ট জুলে রিমে (Jules Rimet)  সময়ে, সে আশা বাস্তবে পরিণত হলো। উরুগুয়েতে অনুষ্ঠিত হলো পৃথিবীর প্রথম বিশ্বকাপ। আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে এসেছিলো ইউরোপের চারটি দেশ, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, রোমানিয়া এবং যুগোকস্লাভিয়া। এছাড়াও দক্ষিণ আমেরিকার টি এবং উত্তর আমেরিকার টি দেশ সহ মোট ১৩ টি দেশ অংশ নিয়েছিলো এতে। প্রথম ম্যাচ হয়েছিলো ফ্রান্স মেক্সিকোর মধ্যে। যাতে ফ্রান্স - গোলে পরাজিত করে মেক্সিকোকে। বিশ্বকাপের প্রথম গোলটি দিয়েছিলেন ফ্রান্সের লুসিয়েন লরেন্ট (Lucien Laurent) প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছিলো, উরুগুয়ে আর আর্জেন্টিনা। উরুগুয়ের রাজধানী মন্টিভিডিও তে এস্তাদিও সেন্তেনারিও (Estadio Centenario) স্টেডিয়ামে উরুগুয়ে আর্জেন্টিনাকে - গোলে হারিয়ে জিতে নিয়েছিলো প্রথম বিশ্বকাপের ট্রফিটি।
MulRochona2705_Muscot.gif
মাঝখানে কয়েকবছর অবশ্য বিশ্বকাপ হয়নি। এর কারণ হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। সারা পৃথিবীর যুদ্ধকালীন অবস্থায় ১৯৪২ এবং ১৯৪৬ সালে আর বিশ্বকাপ আয়োজন সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কিন্তু সকল মেঘ কাটিয়ে ১৯৫০ সাল থেকে আবার শুরু হয়েছিলো বিশ্বকাপের মনমাতানো আসরটি। এরপর থেকে নিয়মিত বছর পর পর অনুষ্ঠিত হতে থাকে বিশ্বকাপ ফুটবল।

বিশ্বকাপ ফুটবলের বর্ণিল ঐতিহ্য নিয়ে কথা বলতে শুরু করলে শেষ কবে হবে বলা যায় না। তাই তো আজ তোমাদের সঙ্গে গত দশটি বিশ্বকাপের গল্প করবো। চলো শুরু করি।


রঙীন পর্দায় বিশ্বকাপ
MulRochona2705brazil_1970.gif
১৯৭০ সালেই প্রথমবারের মতো মানুষ টেলিভিশনের রঙীন পর্দায় খেলা দেখার সুযোগ পায়। সারা পৃথিবীতে সেই সময় প্রায় এক কোটি মানুষের সামনে রঙীন খেলা সম্প্রচারের সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে অবশ্য ১৯৫৪ সাল থেকে সাদাকালো পর্দায়ই খেলা দেখেছে মানুষ। শুধু তাই না, প্রথম হলুদ বা লাল কার্ডের প্রচলনও হয় এই বিশ্বকাপেই। নিয়ম করা হয় প্রতিটি দল এক ম্যাচে দুজন করে বদলি খেলোয়াড় খেলাতে পারবে। মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্রাজিল - গোলে হারিয়েছিলো ইতালিকে। ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপে পেলে আঘাত পাবার পর সবাই ভেবেছিলো পেলে বুঝি আর খেলতে পারবেন না। সব অনুমান আর ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করে এই বিশ্বকাপে পেলে আর ব্রাজিলের দৃষ্টিনন্দন ফুটবল শৈলী, সারা পৃথিবীর মানুষের মনে দাগ কেটে গিয়েছিলো। ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের আক্রমণভাগকে সর্বকালের সেরা বলে আখ্যায়িত করা হয়। ১৯৭০ সালেই প্রথম দল হিসেবে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জেতে ব্রাজিল আর এরই স্বীকৃতি-স্বরূপ ব্রাজিলকে এই বিশ্বকাপ ট্রফিটি একেবারেই দিয়ে দেয়া হয়। সাধারণত একবার বিশ্বকাপ জেতার পরে একটি দল চার বছরের জন্য, অর্থা পরবর্তী বিশ্বকাপ না হওয়া পর্যন্ত ট্রফিটি রাখার সুযোগ পায়।
 

নতুন ট্রফির বিশ্বকাপ
MulRochona2705_germany_1974.gif
১৯৭০ সালের চার বছর পর ১৯৭৪ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হয়েছিলো পশ্চিম জার্মানিতে। এর আগের বার যেহেতু ট্রফিটি একেবারেই দিয়ে দেয়া হয়েছিলো ব্রাজিলকে, এবারে তাই নতুন করে কাপ তৈরির প্রয়োজন পড়ে। এই ট্রফির নাম দেয়া হয়ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ট্রফি (FIFA World Cup Trophy)” তাহলে আগেরটার নাম কি ছিলোআগের ট্রফির নাম ছিলো, “জুলে রিমে ট্রফি (Jules Rimet Trophy)” এর নাম দেয়া হয় ফিফার প্রেসিডেন্ট জুলে রিমে নামে, যার সময় থেকে বিশ্বকাপ খেলা শুরু হয়েছিলো। এই বিশ্বকাপের ফাইনালে পশ্চিম জার্মানি নেদারল্যান্ডকে - গোলে পরাজিত করে দ্বিতীয়বারের মত বিশ্বকাপ জিতে নেয়। নেদারল্যান্ড ছিলো সে সময়কার ফেভারিট। ফাইনাল খেলায় জার্মানিকে নিয়ে ডাচরা ইঁদুর-বেড়াল খেলা শুরু করে দিয়েছিলো। কিন্তু অধিনায়ক ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের অসাধারণ নৈপুণ্যে জার্মানি এই অসাধ্য সাধন করে।

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়
MulRochona2705argentina.1978.gif
১৯৭৪ সালের ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে ট্রফির খুব কাছ থেকে ফিরে আসতে হয়েছিলো নেদারল্যান্ডকে। সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিলো রানার-আপ হয়েই। ১৯৭৮ সালে তাদের প্রতিজ্ঞা ছিলো বিশ্বকাপ জিতেই ঘরে ফেরার। কিন্তু বাস্তবে তা আর হলো না। আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপের ফাইনালে তাদের আবারও বিদায় নিতে হলো রানার আপ হয়েই। কে তবে নেদারল্যান্ডের স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছিলো? প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপ জিতে এই কাজটি করেছিলো আর্জেন্টিনা। খেলায় প্রথমে - গোলের সমতাই ছিলো, পরে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় খেলা। অতিরিক্ত সময়ে দুইটি গোল করে আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার মারিও কেম্পেস ফাইনালে দুই গোল করেছিলেন। এতে তার পুরো বিশ্বকাপে গোল সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছিলো ছয় এ। কেম্পেস পেলেন গোল্ডেন বুট আর আর্জেন্টিনাকে - গোলের জয় এনে দিলেন নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে।

MulRochona2705_Italy_1982.gif
পাওলো রসি বিশ্বকাপ

১৯৮২ সালের বিশ্বকাপের পুরোটুকুই একজনের সাফল্যের গল্প। তিনি হলেন পাওলো রসি। শোনো তবে সেই গল্প। স্পেনে হয়েছিলো এই বিশ্বকাপ। দুই বছর ম্যাচ পাতানোর দায়ে নিষিদ্ধ থাকার পর ইতালির মূল দলে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন পাওলো রসি। পাওলো রসিই পুরো বিশ্বকাপে ছয় গোল করে ইতালিকে নিয়ে গিয়েছিলেন ফাইনালে। সেই ১৯৩৮ সাল থেকে ৪৪ বছর পর পশ্চিম জার্মানিকে - গোলে হারিয়ে এই বিশ্বকাপ জিতে নিয়েছিলো ইতালি। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা আর পশ্চিম জার্মানির মত বিশ্বকাপ জেতা দলকে হারিয়ে সেরা হওয়া কিন্তু যে সে ব্যাপার না। আর পুরো বিশ্বকাপে অসাধারণ খেলা দেখিয়ে সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি এবং সবচে বেশি গোল করার জন্য গোল্ডেন বুট পেয়েছিলেন রসি। ইতালিও এই বিশ্বকাপ জিতে তিনবার বিশ্বকাপ জেতা দল ব্রাজিলের সমান হয়েছিলো। ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপে খেলেছে ২৪ টি দল। ১৯৩৪ সালের পর থেকে এর আগের বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলে এসেছে ১৬ টি দল
ফুটবলের ঈশ্বর
MulRochona2705_argentina_1986.gif
১৯৮৬ সালে দ্বিতীয় বারের মতো স্বাগতিক দেশ মেক্সিকো। এই বিশ্বকাপেই আর্জেন্টিনার ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে চিনলো সারা পৃথিবীর মানুষ। ট্যাকল আর ড্রিবলের অসাধারণ শৈল্পিক কারুকাজ তাকে সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে প্রিয় করে তুললো। কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলায় ম্যারাডোনার একটি গোল নিয়ে বিতর্ক চলে আসছে আজ অব্দি। সেই গোলটির সময় ম্যারাডোনার হাত লেগে যায় বলে। প্রকৃত অর্থে যা হ্যান্ডবল। কিন্তু রেফারি তা দেখতে না পাওয়ায় হ্যান্ডবল হিসেবে তা ধরা হয়নি। ফলে গোল হয়ে যায়। এই হাতটিকে পরে ম্যারাডোনা নিজেই ঈশ্বরের হাত বলেছেন। তবে তার অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্যের কারণে পৃথিবীর মানুষ তাকে ভালোবেসে নাম দিলেন ফুটবলের ঈশ্বর। সেবার ম্যারাডোনা পেয়েছিলেন সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি। ফাইনালে আগের বারের ফাইনালিস্ট জার্মানিও ছিলো। কিন্তু ম্যারাডোনার অসাধারণ নৈপুণ্যে এই বিশ্বকাপের ফাইনালে পশ্চিম জার্মানিকে - গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপটি নিজেদের করে নেয় আর্জেন্টিনা।
MulRochona2705_Germany_1990.gif
প্রতিশোধের বিশ্বকাপ

ইতালি দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজন করে ১৯৯০ সালে। এর আগের দুই বিশ্বকাপে জার্মানিকে রানার-আপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিলো। এই বিশ্বকাপটি ছিলো তাদের জন্য অনেক আশার। ভাগ্যের ফেরে ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে সেই আর্জেন্টিনাকেই পেয়ে গেলো জার্মানি। বিশ্বকাপটি হয়ে গেলো তাদের জন্য প্রতিশোধের বিশ্বকাপ। আর্জেন্টিনাকে - গোলে হারিয়ে একদম মোক্ষম জবাবটি দিয়ে দিলো জার্মানি। নিয়ে নিলো চার বছর আগের প্রতিশোধ। ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের জন্যও বিশ্বকাপটা হয়ে থাকলো স্মরণীয়। এর আগে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন অধিনায়ক হিসেবে, এবার নিলেন কোচ হিসেবে। এই বিশ্বকাপে প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে ক্যামেরুন কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে। তবে একটা দুঃখজনক ঘটনা ঘটে যায় এবার। চিলি আর ব্রাজিলের মধ্যকার খেলায়, চিলির গোলরক্ষক রোজাস তার গ্লাভসের মধ্যে রাখা ব্লেড দিয়ে নিজেই আহত হন। এটা ধরা পড়ার পর চিলিকে ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ থেকে বাতিল করা হয়। আর রোজাস কে ১২ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়


ইতালির দুঃখ, ব্রাজিলের হাসি
MulRochona2705_brasil_1994.gif
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আয়োজন করে ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলতে আসে, গ্রিস, নাইজেরিয়া, নরওয়ে, সৌদি আরব রাশিয়া। তিন তিন বার বিশ্বকাপ জয়ী দুই দল ব্রাজিল ইতালি এবার ফাইনালে। কে জিতবে এই নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা চলে। যে জিতবে চার বার বিশ্বকাপ জয়ের রেকর্ড তার। টান টান উত্তেজনার ফাইনালে প্রচুর দর্শক। সবাইকে অপেক্ষায় রেখে নির্দিষ্ট ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হয়  গোলশূণ্যভাবে। আরও ধৈর্য্যরে পরীক্ষা নিতে অতিরিক্ত সময়ও পার হলো, কিন্তু কোন দলই গোল পেলো না। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে খেলা। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ব্রাজিল টাইব্রেকারে - গোলে হারালো ইতালিকে। ইতালির দুঃখ নিয়েই শেষ হলো বিশ্বকাপ। সেরা খেলোয়াড় হন ব্রাজিলের রোমারিও। গোল্ডেন বুট পান সর্বোচ্চ গোলদাতা দুই জন, বুলগেরিয়ার রিস্টো স্টোইকভ এবং রাশিয়ার ওলেগ সালেঙ্কো।

এছাড়াও বেশ কয়েকটি দুঃখজনক ঘটনা ঘটে এই বিশ্বকাপে। ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে নিষিদ্ধ করা হয় শক্তি-বর্ধক ড্রাগ নেয়ার দায়ে। কলম্বিয়ার খেলোয়াড় আন্দ্রেস এসকোবার, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আত্মঘাতী এক গোল করে কলম্বিয়াকে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে দেয়। এর ১০ দিন পরেই তাকে হত্যা করা হয়। তবে বিশ্বকাপে মনে রাখার মতো কিছু ঘটনাও আছে। বিশ্বকাপেই রাশিয়ার ওলেগ সালেঙ্কো ক্যামেরুনের বিপক্ষে এক ম্যাচে গোল করেন। বিশ্বকাপে এক ম্যাচে এটাই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
MulRochona2705_france-98.gif
ফ্রান্সের স্বপ্নপূরণ

ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে প্রথম থেকে ফেভারিট দল ছিলো ব্রাজিল। ফেভারিট হিসেবেই তারা উঠে যায় ফাইনাল পর্যন্ত। সঙ্গী তাদের দারুণ ফর্মে থাকা রোনাল্ডো এবং গতবারের আত্মবিশ্বাস। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচে যেনো অন্যকিছু ঘটে গেলো। ফ্রান্সের অধিনায়ক জিনেদিন জিদানের অসাধারণ নৈপুণ্যে ব্রাজিলকে - গোলে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা পেলো ফ্রান্স। পুরো বিশ্বকাপে অসাধারণ খেলা প্রদর্শনের জন্য রোনাল্ডো সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হলেও, ফাইনালে তিনি তেমন কিছুই করতে পারেন নি। এই বিশ্বকাপেই সবাইকে চমকে দিয়ে প্রথমবারের মতো খেলতে এসেই তৃতীয় স্থান লাভ করে ক্রোয়েশিয়া। ক্রোয়েশিয়ার ডেভর সুকার ছয় গোল দিয়ে গোল্ডেন বল পেয়ে যান।
ব্রাজিলের পেন্টা জয়
MulRochona2705_brasil_2002.gif
এতোদিন শুধু অন্য মহাদেশগুলোতেই বিশ্বকাপ হয়েছে। ২০০২ সালেই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় এশিয়ায়। জাপান আর দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছিলো এই বিশ্বকাপ।  এই বিশ্বকাপে বাছাই পর্বের খেলায় টোগোর খেলোয়াড় সুলেমান মামাম সর্বকণিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে খেলতে আসেন। সুলেমানের বয়স কতো ছিলো জানো? মাত্র ১৩ বছর ৩১০ দিন। অবশ্য টোগো শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলতে পারেনি। এই বিশ্বকাপে জার্মানিকে - গোলে হারিয়ে জিতে যায় ব্রাজিল। এই কাপ জেতার ফলে পঞ্চমবারের মতো শিরোপা জয় করে নিজেদের এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায় ব্রাজিল। আগের বিশ্বকাপের ফাইনালে ম্রিয়মাণ রোনাল্ডো এই বিশ্বকাপে ঠিকই তার নৈপুণ্যের পসরা খুলে ধরেন। গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরষ্কারটিও করে নেন নিজের
MulRochona2705_Italy_2006.gif

ইউরোপের বিশ্বকাপ

২০০৬ সালের বিশ্বকাপে পুরোটা সময় জুড়েই ছিলো ইউরোপের দেশগুলোর জয়জয়কার। জার্মানিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ। শেষ চারেও ছিলো ইউরোপের চারটা দেশ- ইতালি, ফ্রান্স, পর্তুগাল আর জার্মানি। পর্তুগালকে - গোলে হারিয়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছিলো জার্মানি। ফাইনাল হয়েছিলো ইতালি আর ফ্রান্সের মধ্যে। খেলা গড়ায় টাইব্রেকার পর্যন্ত। এর আগে ১৯৯৪ সালের ফাইনালে টাইব্রেকারে ব্রাজিলের কাছে হেরে গেলেও এবারে কিন্তু ইতালি আর ভুল করেনি। ফ্রান্সকে - গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতে নেয় তারা। ইতালির কোচ মার্সেলো লিপ্পি আর অধিনায়ক ফাবিও ক্যানাভারোর অনবদ্য অবদানেই চতুর্থ বারের মত শিরোপা লাভ করে ইতালি। সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পান জিনেদিন জিদান। আর সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন গোল করা জার্মানির মিরোস্লাভ ক্লোসা। এই বিশ্বকাপের ফাইনালে একটা মজার ঘটনা ঘটেছিলো। ফ্রান্সের অধিনায়ক জিনেদিন জিদান, ইতালির মার্কো মাতারাজ্জির বুকে মাথা দিয়ে গুতো দেবার কারণে শেষ দশ মিনিট মাঠের বাইরেই ছিলেন।

এবারের ১৯ তম বিশ্বকাপটি অনুষ্ঠিত হবে ১১ জুন১০ থেকে ১১ জুলাই১০ পর্যন্ত। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের মাধ্যমেই প্রথমবারের মতো কোনো আফ্রিকান দেশে বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে এবার। ফিফার ২০৪ টা দেশের মধ্যে বাছাই পর্ব পার করে এসেছে ৩২ টা দল। মোট ৬৪ টি ম্যাচ হবে বিশ্বকাপে, যার মধ্যে গ্রæ পর্যায়েই হবে ৪৮ টি। কাজেই এখন দেখার অপেক্ষা কে জেতে এবারের বিশ্বকাপ। কাজেই খেলা শুরু হবার সঙ্গে সঙ্গেই কোনো দেরি না করে বসে যাও খেলা দেখতে

 

3 comments: